মোবাইলে আসা কল রিসিভ করলেই অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন হবিগঞ্জের বাসিন্দারা। মোবাইলে ০০০০৪, ০০০০১২, ০০০০২৮ অথবা ২৮২৮সহ কয়েকটি নাম্বার থেকে ফোন আসার পর রিসিভ করার পর সে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে লাখাই উপজেলার বুল্লা বাজারে পলাশ মিয়া (২০) নামে এক যুবকের মোবাইলে ০০০০৪ নাম্বাররে ফোন আসার পর সে রিসিভ করার সাথে সাথেই সে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। দুপুরে ৫টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনার ৮ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তার জ্ঞান ফেরেনি।
সে উপজেলার বুল্লা রাধানগর গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে।
পলাশ মিয়ার দোকানের মালিক নির্মল মোদক দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পলাশ বুল্লা বাজারে আদর্শ মিস্টান্ন ভান্ডারে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে আসছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কাজ করার এক ফাঁকে তার মোবাইলে একটি কল আসে। এই কলটি রিসিভ করার পরই সে অজ্ঞান হয়ে যায়। মাথায় পানি দেয়ার পরও তার জ্ঞান না ফিরলে তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, আমি তার মোবাইল ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি ০০০০৪ নাম্বার থেকে কল আসছিল। আমরা বেশ কিছু দিন ধরে শুনছি মোবাইল ফোনে কল আসার পর মানুষ মারা যায়। বিষয়টি সত্যি আজব।
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নির্মল ভট্টাচার্য বলেন, রোগীর স্বজনরা বলছেন মোবাইল ফোনে কল আসার পর সে অজ্ঞান হয়ে যায়। আমরা বিষয়টি আগে গুজব মনে করেছিলাম। এখন দেখছি বিষটি খুবই অবাক এবং অবিশ্বাসযোগ্য। কিন্তু ইদানিং এরকম কয়েকজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় আমরা বেশ উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, গতকাল সোমবার একজন এরকম রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি বর্তমানে সুস্থ্য আছেন। আমরা আশা করছি সময় বেশি লাগলেও তিনি সুস্থ্য হবেন।
এদিকে, সোমবার রাত ৯টার দিকে হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় মোবাইলে ২৮২৮ নাম্বারের একটি ফোনকল রিসিভ করে জুমা আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধু অজ্ঞান হয়ে পড়েছে। গুরুতর অবস্থায় তাকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জুমা আক্তার শায়েস্তানগর এলাকার আকবর আলীর স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জুমা আক্তারের মোবাইল ফোনে ২৮২৮ নাম্বার থেকে একটি ফোন আসে। পরে ফোনটি রিসিভ করা হলে কোন শব্দ পাওয়া যায়নি। তবে ফোনটি রিসিভ করার পর অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
জুমা আক্তার জানান, ফোনটি রিসিভ করার পরই আমি অসুস্থতা বোধ করতে থাকি। আমার শরীরের হাত পা টানা শুরু করে। পরে তারা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
অপরদিকে, এ দুটি ঘটনা ছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন এভাবে অজ্ঞান হয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনা গ্রাম-গঞ্জের সাধারণ মানুষদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতংক। সুত্র : দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম