Thursday, February 9, 2017

দূরপাল্লার বাস চালকরা বেপরোয়া

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সহ প্রায় সকল সড়কেই ট্রাফিক আইন অমান্য করে, গতির বাধ্য-বাধকতার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে দূরপাল্লার বাস চালকদের বেপরোয়ার গাড়ি চালনাই মূলত লাশের সারি দীর্ঘ করছে। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে দুর পাল্লার বিভিন্ন পরিবহবের গাড়ি চালকরা। অদক্ষতা আর বেপরোয়া গতিতে বাস চালানোর কারণেই ঢাকা-সিলেটসহ বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কের প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনায় বেঘুরে প্রাণ হারাচ্ছে শিশু ও নারীসহ শত শত মানুষ। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে জীবনের অভিশাপ বয়ে বেড়াচ্ছে অনেকেই।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা জানান, ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচলকারী সব বাসই বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে। এতে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে হানিফ পরিবহন, এনা পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, মামুন পরিবহন , ইউনিক পরিবহন এবং স্থানীয়ভাবে হবিগঞ্জী বিরতিহীন বাসগুলোর চালকরাই সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটান। এসব দুরপাল্লার বাস চালকদের বেপরোয়া গতি আর ওভারটেকিংয়ের কারণেই মহাসড়কে প্রাণ হারাচ্ছে শত শত মানুষ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে বেশ কয়েকটি বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে। এসব বাঁক অতিক্রমের জন্য নির্দিষ্ট গতিসীমা বেঁধে দেয়া হলেও এনা পরিবহনসহ ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচলকারী বেশ কয়েকটি পরিবহন সেই গতিসীমা লঙ্ঘন করে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান। দুর পাল্লার বাসগুলো যাত্রীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার নামে মহাসড়কে ওভারটেকিং করে দ্রুতগতির প্রতিযোগিতায় নামাও দুর্ঘটনার অন্যতম একটি কারণ।

এছাড়াও গাড়ির গতি কোনোভাবেই ৮০ কিলোমিটারের বেশি না হওয়া এবং চলন্ত অবস্থায় চালক মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকার কঠোর নির্দেশনা থাকলেও বেশিরভাগ চালকরা এসব মানেন না।

এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি দুর্ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পরিবহন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়, তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়। মহাসড়কে যে কোনো বাসের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৮০ কি.মি. নির্ধারণ করা থাকলেও দুরপাল্লার পরিবহনের বাসগুলো প্রায়ই সেই গতিসীমা লঙ্ঘন করছে। ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় এনা বাসের চাপায় ৮ জন নিহত হওয়ার সময়ও বাসের গতিসীমা প্রায় ১০০ কি.মি. ছিল বলে জানা গেছে। গতিসীমা নিয়ন্ত্রণের জন্য চালকদের যেন নির্দেশনা দেয়া হয় সেজন্য এনা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।


পুলিশ আরও বলে, মূলত অদক্ষ চালক, ওভারটেকিং আর অধিক গতির কারণেই গাড়ি বেশি দুর্ঘটনার শিকার হয়। 

এদিকে, জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ৫টি প্রধান কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- ফাঁকা রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনে উদাসীনতা, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীদের বারবার তাগিদের কারণে চালকের অন্যমনস্কতা, অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে বাড়তি ট্রিপ দেয়ার কারণে চালকের সাময়িক শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা এবং দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে ওভারটেকিংয়ের ক্ষেত্রে চালকদের মাঝে ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করার প্রবণতা।

মূলপাতা

আন্তর্জাতিক

এক্সক্লুসিভ