সিলেটের বিশ্বনাথে ‘প্রেমের টানে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে আসা’ এক কিশোরীকে টানা ৮দিন আটকে রেখে গণধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে ঘটেছে। নির্যাতিতা কিশোরীর বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার আফজালালাবাদ ইউনিয়নের দশঘর গ্রামে।
কিশোরী নিখোঁজের পর ছাতক থানার সাধারণ ডায়েরী দায়ের করা হলেও গণধর্ষণের ঘটনায় এখনও কোন মামলা দায়ের করা কিংবা লিখিত অভিযোগ কোথাও দায়ের করা হয়নি বলে জানা গেছে। বিষয়টি আপোষ-মিমাংশায় নিষ্পত্তি করার জন্য বিশ্বনাথ-ছাতক-দক্ষিণ সুরমার অনেক জনপ্রতিনিধি-সালিশী ব্যক্তিবর্গ উভয় পক্ষকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন বলে জানা গেছে। আগামী ১২ জানুয়ারী রবিবার আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ জানুয়ারী দুপুরে ১৭ বছর বয়সী কিশোরী রিমা বেগম (ছদ্ধ নাম) তার প্রেমিক বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের পুত্র রুবেল মিয়ার হাত ধরে পালিয়ে আসেন। রিমাকে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন তার পরিবারের সদস্যরা। ৩দিন পর রিমা নিখোঁজ হয়েছে মর্মে ছাতক থানায় নিখোঁজ কিশোরীর ভাই বাদী হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেন।
এদিকে প্রেমিক রুবেল তার বাড়ির পার্শ্ববর্তি দোকানে প্রেমিকা রিমা বেগমকে ইঞ্জেকশন পুশ করে সংজ্ঞাহীন করে আটকে রাখে। এরপর রুবেল ও তার সহযোগীরা (রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত ওয়াব উল্লাহর পুত্র শফিক মিয়া, মৃত সাইদুর রহমানের পুত্র আফজল হোসেন’সহ অজ্ঞাতনামা আরো ২জন) পালাক্রমে ৮দিন ধরে ধর্ষণ করে। গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে কিশোরীকে একটি সিএনজি অটোরিক্সায় তুলে সিলেট শহরে পাঠিয়ে দিয়ে তার ভাইকে ফোন করে বোনের অবস্থান জানায় ধর্ষণকারীরা। খবর পেয়ে কিশোরীর ভাই সিলেট নগরীর কাজির বাজার ব্রিজের উপর থেকে নির্যাতিতা বোনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসাপাতালে ভর্তির করেন। এসময় স্থানীয় জনতা সেই অটোরিক্সা চালক বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের মৃত আব্দুন নুরের পুত্র গফুর আলীকে আটক করেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মকন মিয়ার বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য চেয়ারম্যান উভয় পক্ষকে নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেন। কিন্ত তাতে কোন সমাধান আসে নি।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউপির সদস্য তাজ উল্লাহ বলেন, আমরা বিষয়টি আপোষ-মিমাংশায় নিষ্পত্তি করার জন্য চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে আগামী রবিবার (১২ জানুয়ারী) মেয়েটিকে ক্ষতিপূরণ বাবদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এব্যাপারে চেয়ারম্যান হাজী মকন মিয়া বলেন, ঘটনার পর অটোরিক্সা চালককে আমার কাছে নিয়ে আসা হয়। আমি অভিযুক্তদের এলাকার মুরব্বিদের ডেকে আনি। এরপর তারা (মুরব্বী) বিষয়টি আপোষ-মিমাংশায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য আগামী রবিবার (১২ জানুয়ারী) পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। অটোরিক্সাটি সিলেট বাবনা স্ট্যান্ডের সাধারণ সম্পাদকের জিম্মায় রয়েছে বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথ থানায় অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম পিপিএম ও ছাতক থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) আশেক সুুজা মামুন বলেন, এঘটনায় কোন থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।